আজকে মনে অনেক ক্ষোভ ও কস্ট নিয়ে Paypal এর ৩য় পর্ব লিখছি ।
পরিচিত মানুষদের প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি যখন এই লেখা লিখছি । আমার পরিচিত মানুষ গুলোর প্রায় সব মিলিয়ে ৬০-৬৫ লক্ষ টাকা পায়পালএ লিমিট এর কারনে আটকিয়ে গিয়েছে । 😥
প্রকৃত সংখাটা এর চাইতে কয়েক গুন বেশি সেটাতে কোন সন্দেহ নাই । সরকার কবে বুঝবে আল্লাহ মালুম ।
আজকের নিচের বিষয় গুলো জানাতে চেষ্টা করব ।
১। Paypal নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে করনীয়।
২। ইউ এস থেকে Paypal ছাড়া পেমেন্ট নেয়ার কিছু মাধ্যম
Paypal নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ও করনীয়-
হঠাত করে প্রচুর মানুষের পেপাল একাউন্ট লিমিট হচ্ছে বা হয়েছে । আমার কাছে নিচের কারন গুলো বেশি দায়ী মনে হচ্ছে ।
১।পেপাল এর নিজস্ব পলিসিতে প্রচুর পরিবর্তন । যেকোন মুহুর্তে ভেরিফিকেশন চেয়ে বসতেছে ।
২।কান্ট্রি রেস্ট্রিকশন – Paypal পলিসি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে পেপাল ব্যবহার অনুমোদিত নয় ।তাই পেপাল যেকোন মুহুর্তে আপনার একাউন্ট টি পলিসি ভায়োলেশন দেখিয়ে টেম্পরারি বা পার্মানেন্ট লিমিট করে দিতে পারে।
উধাহরন হিসেবে ধরুন- আপনার পেপাল টি হয়ত ইউ এস/সাইপ্রাস/ইউরোপ বা অন্য যে কোন দেশের ফেক বা জেনুইন ইনফো দিয়ে করা হয়েছে । যেহেতু এইটা একটা পার্সোনাল একাউন্ট। পেপাল পলিসি হচ্ছে যে ইউজার তার নির্ধারিত দেশ থেকে একাউন্ট টি ব্যবহার করবে। পেপাল এত দিন এই বিষয় টাকে খুব একটা আমলে নেয় নাই । যার কারনে আমরা সবাই সেফলি বাংলাদেশ থেকে একাউন্ট চালাতে পেরেছি । পেপাল এখন যে কাজটি করছে বাংলাদেশ থেকে লগিন করা একাউন্ট গুলোতে লেভেল-২/৩ এর ভেরিফিকেশন চাচ্ছে । যেমন আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন,এড্রেস ভেরিফিকেশন,ব্যাঙ্ক ভেরিফিকেশন ইত্যাদি।
যারা রিয়েল কোন ব্যক্তির ইনফো দিয়ে একাউন্ট চালাচ্ছেন । তারা এক্ষেত্রে মোটামুটি সেফ । যাদের ডাটা ফেক এইটা তাদের জন্য পার্মানেন্ট লিমিটের সমতুল্য । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোন ভাবেই একাউন্ট পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে করনীয় হচ্ছে যে , যতটুকু সম্ভব ডলার ক্লাইন্ট/ বা যার থেকে নিয়েছেন তাকে ফেরত দিয়ে ক্ষতির পরিমান কমিয়ে ফেলা। বাকিটা ১৮০ দিন পর তুলে নিতে পারার সম্ভাবনা ৯০%।
আমার কাছে কয়েক জনের পেপাল থেকে পাঠানো ইমেইল এর স্ক্রিনশট আছে যেখানে এইটা উল্লেখ করা যে, সিকিউরিটি ও পলিসি ভায়োলেন্স তথা বাংলাদেশ থেকে লগিন করার কারনে একাউন্ট পার্মানেন্ট লিমিট করে দিয়েছে। এপস ইউজ এই ক্ষেত্রে সেফ বলে অনেকেই সাজেস্ট করেছেন । ইহা একটি ভাল সলিউশন বলে মনে করছি ।আমার নিজের এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা নাই । তবে একাউন্ট সলিড/রিয়েল হওয়া বাঞ্ছনীয় মনে হয়েছে। আইপি বা কান্ট্রি রিলেটেড রুলসটা বিশেষভাবে পার্সোনাল একাউন্ট এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । বিজনেস Paypal একাউন্ট এর আপনি সেকেন্ডারি/ইমপ্লোয়ি ইমেইল দিয়ে বাংলাদেশ থেকে অনায়াসেই লগিন করতে পারবেন।
নোটঃ আপনার পেপাল টা কোন দেশের তার উপর অনেক নিয়ম কানুন নির্ভর করে ।
করনীয়-
১। ভিপিএস ইউজ করতে পারেন। ইউ এস একাউন্ট এর ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ । নন ইউ এস Paypal এর ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য । সেক্ষেত্রে আইপি যাতে কোন ভাবেই প্রক্সি হিসেবে না ধরতে পারে । এমন ভিপিএন বা ভিপিএস ব্যবহার করা উচিত যেটা রিয়েল আইপি শো করে ।
২। মোবাইল এপস ব্যবহার করতে পারেন।
৩। বার বার লগিন করা থেকে বিরত থাকুন। পেমেন্ট কনফার্মেশন এর জন্য ইমেইল চেক করুন । Paypal না ।
৪। সেম ব্রাউজার ইউস করুন। তাতে আপনার ডিভাইস এর ট্রাস্ট ভ্যালু বাড়বে ।
দুটি সেনসিটিভ বিষয় –
২। প্রচুর পরিমানে ফ্রেন্ডস ও ফ্যামিলিতে পেমেন্ট আদানপ্রদান –
ধরে নিচ্ছি আপনার পেপাল একাউন্ট টি ফেক । তারপর ও পেপাল আপনাকে দিয়ে যদি ব্যবসা করতে পারে । তাহলে আপনি কিছুটা ছাড় আশা করতে পারেন।কিন্ত যদি এমন হয় আপনি একে ত ফেক আইডেন্টিটি ইউজ করে পেপাল ব্যবহার করছেন এবং পেপাল আপনার থেকে নুন্যতম আয় করতে পারছে না । তাহলে কেন পেপাল আপনাকে তাদের সার্ভিস ইউজ করতে দিবে। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন । আপনি হলে কি করতেন। এক্ষেত্রে মিক্স পলিসি ইউজ করুন। কিছু পেমেন্ট সার্ভিস নিন এবং কিছু গিফট এ নেন এবং গিফট/সার্ভিস মিলিয়ে সেন্ড করুন। এইটার মাধ্যমে আপনি আপনার পেপাল কে অনেকাংশেই নিরাপদে রাখতে পারবেন।
৩। ফেক পেপাল থেকে ব্যাংক ওয়িথড্র –
ধরুন আপনি একটি পেপাল একাউন্ট করেছেন আপনার নিজের নামে । ভেরিফিকেশন এর জন্য আপনি আপনার পেয়োনিয়ার ব্যাঙ্ক একাউন্ট/কার্ড ইউজ করেছেন । ধরে নিচ্ছি আপনার পেপাল এর এড্রেস হচ্ছে ইউ এস বা সাইপ্রাস। আপনি নিয়মিত পেপাল থেকে পেয়োনিয়ারে ডলার তুলতেছেন। পেপাল ক্যাশ করার ভাল একটা পলিসি ছিল। মনে হয় বাদ হয়ে যাচ্ছে। পেপাল আপনার আইডেন্টিটি ভেরিফেশন চাইবে শিগ্রই । অনেকের ই চাইছে । কেস স্টাডি থেকে দিলাম।
তারপর ও যাদের পেপাল একাউন্ট দরকার – মার্কেটে ফেক পেপাল পাওয়া যায় ।কিনে নিতে পারেন । নিজে বানিয়ে নিতে পারেন।
===পেপাল অল্টারনেটিভ ====
প্রথমে এইটা বলে নেই যে , বাস্তবতা বিবেচনা করলে পায়পাল এর মৌলিক কোন অল্টারনেটিভ নেই ।
তবে কিছু পেমেন্ট প্রসেসর আছে । যে গুলোর মাধ্যমে প্রতিকুলতা কাটিয়ে আপনি কিছুটা হলেও স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারেন।
১। পপুলার ডিজিটাল কারেন্সি/পেমেন্ট প্রসেসর যেমন পেয়োনিয়ার,স্ক্রিল,নেটেলার ও অয়েবমানি , ও অন্যান্য, এদের ব্যপারে আমি কোন আলোচনা করব না । গুগল করে জেনে নিতে পারেন।
২। বিভিন্ন মানি ট্রান্সফার –ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, রিয়া,জুম, ট্রান্সফাস ইত্যাদি।
এদের নিয়ে আলোচনার কিছুই নাই ।
ইউ এস ক্লাইন্ট থেকে সরাসরি পেমেন্ট নেয়ার জন্য কিছু এপস –
১। VENMO ,Cash.app
আমি এই দুইটা সার্ভিস কে ইউ এস ক্লাইন্ট থেকে ছোট বা মাঝারি পেমেন্ট নিতে রিকমেন্ড করব। কারন কোন ডিস্পুট অপশন নাই পেপাল এর মত। প্লাস সার্ভিস চার্জ 0% । এই গুলো মুলত বিকাশ/রকেট এর মত সার্ভিস ।
২। যারা মার্চেন্ট হতে চান তথা এক্সপ্রেস চেক আউট এর মাধ্যমে ওয়েব সাইটে অথবা লার্জ স্কেল সার্ভিস সেল করতে চান । আমাকে জানাতে পারেন। আপনার পলিসি সলিড হলে সেটার ও সলিউশন আছে।
যারা ১ম ও ২য় পর্ব পড়েন নি। এখান থেকে পড়ে নিতে পারেন। আশা করি পেপাল/Paypal নিয়ে আপনার বেশির ভাগ প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
পেপাল হাহাকার এবং কিছু আপেক্ষিক সমাধান – ১ম পর্ব
Paypal হাহাকার এবং ফেক একাউন্ট নামা – ২য় পর্ব
সবার ফ্রিলান্সিং ও ডিজিটাল লাইফের এর সাফল্য কামনায় । ধন্যবাদ।
লেখক : আব্দুল্লাহ আল মামুন